আজ শুক্রবার

১৪ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

২৯শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

এখন সময়:

ভোর ৫:৪২

ষাটনলের ফারুককে সালিশে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পরিবারের

1227 Views

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ছোট ষাটনল রঙ্গুখাঁর কান্দি গ্রামের মো. ফারুক খানকে সালিশি বৈঠকে বেঁধে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ করা হয়েছে। ওই মামলায় আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি জানিয়েছেন নিহতের পরিবারসহ স্থানীয়রা।

নিহতের পরিবার জানায়, গত ২ জুন বিকেলে দ্বিতীয় বিয়েকে কেন্দ্র করে পারিবারিক একটি সালিশ বসানো হয়। সেখানে প্রথম স্ত্রী হ্যাপী বেগম ও তার পক্ষের সালিশদার রোকনুজ্জামান খান, নাছির প্রধান, নেয়ামত উল্ল্যা’সহ ১২/১৫ মিলে ফারুক খানকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্মমভাবে মারধর করে। ফারুক খানের বাবা নুর মোহাম্মদ খান বাঁধা দিলে তাকেও গাছের সাথে বেঁধে মারধর করে। পরে আহত অবস্থায় তাকে ঘরে নিয়ে মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। মঙ্গলবার (১ জুলাই) বিকেলে ৫টার সময় রোকনুজ্জামান সহ কয়েকজন বাড়িতে হামলা চালায় এবং মামলা তুলে নেওয়ার ভয়ভীতি দেখান।

নিহতের বাবা নূর মোহাম্মদ খান বলেন, আমার ছেলে ফারুক দ্বিতীয় বিয়ে করায় তাকে ডেকে সালিশের নামে পরিকল্পিতভাবে গাছে বেঁধে মারধর করা হয়। আমি বাঁধা দিতে গেলে আমাকেও গাছে বেঁধে নির্যাতন করে।মারধরের আঘাতে ছেলের শরীর থেঁতলে যায়, পরে তারা মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে বলে আত্মহত্যা করেছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা ন্যায়বিচার চাই, কিন্তু আসামিরা এখনও গ্রেপ্তার হয়নি। তারা এলাকায় প্রভাবশালী, প্রশাসন নিরব। এ ঘটনায় চাঁদপুর আদালতে আমরা হত্যা মামলা করেছি, কিন্তু এখনো আসামিরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।

নিহতের মা হাসনেহারা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার ছেলেকে যারা মেরেছে, তাদের ফাঁসি চাই। বিচার চাই।
পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ফারুক খানকে প্রথমে মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়, পরে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। ঢাকায় নেওয়ার পথে রাত ১১টার দিকে ফারুক মারা যান।

স্থানীয়রা জানান, এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এলাকায় সালিশের নামে একজন মানুষকে মেরে ফেলার ঘটনা নজিরবিহীন। প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় বিচার নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।

এদিকে, ফারুক খানের প্রথম স্ত্রী হ্যাপী বেগম গত ২২ জুন আদালতে একটি পাল্টা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় তিনি দাবি করেন, ফারুক আত্মহত্যা করেছেন, এবং তাকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করা হয়েছে। তবে নিহতের পরিবার এই মামলাকে “হত্যা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা” বলে আখ্যায়িত করেছেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান বলেন, বিষয়টি আদালত পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এখনো ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন আসেনি। তদন্ত চলমান রয়েছে।

এই ঘটনায় দুটি মামলা আদালতে বিচারাধীন থাকলেও, হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলাটি নিয়ে এলাকাজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। এলাকাবাসী দ্রুত তদন্ত শেষ করে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন।

Share This Article
Leave a Comment

শেয়ার করুন:

শীর্ষ সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ