জাটকা সংরক্ষণে সরকারের খাদ্য সহায়তা কর্মসূচিতে ভয়াবহ অনিয়মের অভিযোগে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সাখাওয়াত হোসেন সরকার মুকুলকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। একই আদেশে ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. খলিল মিজিকেও বরখাস্ত করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে জারিকৃত এক প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে উপসচিব মো. নূরে আলম স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপন ইতোমধ্যেই জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে পৌঁছেছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ইসলামাবাদ ইউনিয়নে নিবন্ধিত ৪৬০ জন জেলের জন্য সরকার থেকে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় জনপ্রতি ৮০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মাঠপর্যায়ের তদন্তে দেখা যায়, চেয়ারম্যান ও ৭নং ওয়ার্ডের সদস্য জনপ্রতি ৭০ কেজির বেশি চাল বিতরণ করেননি। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয় স্থানীয় জেলেরা।
এ অভিযোগের পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা কুলসুম মনি তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস; সদস্য ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিল্লোল চাকমা ও উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা তারিক মাহমুদ (যিনি ইউনিয়নের ট্যাগ অফিসারও)।
তদন্তে চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন স্বীকার করেন, চাল বিতরণে কিছু অনিয়ম হয়েছে এবং তিনি এর দায়ভার নিচ্ছেন। কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠায়।
স্থানীয় সরকার বিভাগ তাদের প্রজ্ঞাপনে জানায়, চেয়ারম্যান ও সদস্যের বিরুদ্ধে অনিয়ম প্রমাণিত হয়েছে এবং তাদের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদের ক্ষমতা প্রয়োগ প্রশাসনিকভাবে সমীচীন নয়। স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯-এর ৩৪(১) ধারা অনুযায়ী তাদের সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।
চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন সরকার মুকুল মতলব উত্তর উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্বে ছিলেন।