নদীতে স্রোত বইছে, সঙ্গে বাতাস। বেড়িবাঁধ ঘেষে ধীরে ধীরে বাড়ছে পানি, করছে ছুঁইছুঁই। এর সঙ্গে মাটি আঁকড়ে ধরে থাকা ২০০ প্লাস্টিকের ড্রাম ভেসে উঠছে। আর ড্রামের ওপর গড়ে তোলা সুসজ্জিত ২১ কক্ষবিশিষ্ট একটি রেস্টুরেন্টও ভেসে উঠছে পানির ওপর। এমনই এক মনোরম ও চোখ জুড়ানো দৃশ্যের দেখা মিলেছে চাঁদপুরের মতলব উত্তরের ধনাগোদা নদীতে।
প্রায় ২শ’ ড্রামের ওপর ধনাগোদা নদীতে ভাসমান রেষ্টুরেন্ট চালু করেছে ৪ জন উদ্যোক্তা। ড্রামগুলো লোহার রিংয়ের সাথে মজবুতভাবে যুক্ত করে এর ওপর মুলি বাঁশ ও কাঠের অবয়বে রেষ্টুরেন্টটির সুন্দর্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
উপজেলার ফরাজিকান্দি ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের চরমাছুয়া গ্রামে প্রায় ১০ শতাংশ জায়গা নিয়ে ভাসমান রেষ্টুরেন্টটির কার্যক্রম দেখা যায়।
সরজমিনে দেখা যায়, ছোট ছোট খুপরি ঘর, নানা রংয়ের বাতি, দোলনায় রেষ্টুরেন্টটির রূপরেখা দেয়া হয়েছে। অচীরেই এটিতে পুরোদমে কার্যক্রম শুরু হবে। যার নাম দেয়া হয়েছে ধনাগোদা রিভার ভিউ ভাসমান রিসোর্ট এন্ড রেষ্টুরেন্ট।
এটির দায়িত্বরতদের মধ্যে অন্যতম পরিচালক অভি মাহমুদ সবুজ। তিনি স্থানীয় আলী আক্কাস মীরের ছেলে।
আরও পড়ুন
সবুজ জানান, আমি রাজধানী ঢাকাতে ইলেকট্রিক ব্যবসায় নিয়োজিত থাকাকালীন দেশের নানা প্রান্তে যেতে হয়েছে। সেখানে নদীর ওপর ভাসমান রেষ্টুরেন্টগুলো দেখে নিজেও কিছু করার ইচ্ছে জাগে। এরপর এলাকার আরও কয়েকজনসহ পরিকল্পনা করে ধনাগোদা নদীর ওপর এই ভাসমান রেষ্টুরেন্টটি শুরু করেছি।
তিনি আরও জানান, প্রতিদিন সকাল ১০টা হতে রাত ১০টা পর্যন্ত এই রেষ্টুরেন্টটি চালু থাকবে। এখানে একসাথে ১শ’ ২০ জন মানুষ একত্রে বসে নাস্তা করতে পারবে। জন্মদিনসহ ছোটখাটো মিটিং এখানে করার ব্যবস্থা রয়েছে। নিরাপত্তার দায়িত্বে সার্বক্ষনিক ৩জন সহ প্রায় ১০/১২ জনের এখানে কর্মসংস্থান হয়েছে। আমরা রেষ্টুরেন্টটি নদীর বেড়িবাঁধ হতে অন্তত ২০ ফিট দুরুত্বে বেঁধে রেখে ভাসমান রাখছি।যাতে পুরো নদীর ভিউ অবলোকন করা যায়।
খাবার ও সাজসজ্জা নিয়ে অভি মাহমুদ সবুজ বলেন,এখানে চটপটি,ফুচকা,জুস,কফি,চিকেন ফ্রাই,সুপ,ফেন্স ফ্রাইসহ ফাস্টফুড আইটেম খাবার রাখছি। আর সুন্দর্যবর্ধনে বারকিউ জোন,সেল্ফি জোন,ফিস লেক,বাটার ফ্লাই দোলনা, লাভার্স পয়েন্টসহ নানা আয়োজন রাখছি। বেড়িবাঁধ ঘেঁসেও ভোজনরসিকদের পাশাপাশি বসে খাবার খাওয়ার আলাদা টং ঘরের ব্যবস্থা রেখেছি। আমরা মানুষকে প্রাকৃতিক পরিবেশে কিছুটা বিনোদন এবং সমাজের কিছু যুবকদের কর্মসংস্থান করে দিতেই এই উদ্যোগ নিয়েছি। সবুজ ছাড়াও রেষ্টুরেন্টটির অন্যান্য শেয়ারহোল্ডাররা হচ্ছেন সিদ্দিকুর রহমান,ওবায়দুল্লা বিন খায়ের এবং শফিকুল ইসলাম।
রেষ্টুরেন্টটির পরিচালক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, মানুষ যাতে এই ভাসমান রেষ্টুরেন্টে একটু ফ্রেশ মুডে বসে সময় কাটানোর পাশাপাশি খাবার খেতে পারে সেজন্যই এটি করা। এখানে আড্ডার পাশাপাশি গান শুনারও ব্যবস্থা রয়েছে। আশাকরি দিনের আলোর পাশাপাশি রাতের বেলাতেও রেষ্টুরেন্টটির আলোকস্বজ্জা ভোজনরসিকদের সবার নজর কাড়বে।