প্রবল ইচ্ছা আর মনে লালিত স্বপ্ন থাকলেই সফলতা ছুঁয়ে দেখা যায়। চেষ্টা আর গায়ক হওয়ার আত্মবিশ্বাস থেকে সফলও হয়েছেন। ‘তোরে ভুলে যাওয়ার লাগি আমি ভালোবাসিনি’, ‘ঘুম ভালোবাসি’ আরও বেশকিছু গান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও টিকটক-লাইকিতে ছড়িয়ে পড়ে। শ্রোতা মহলে ভাসে প্রশংসায় আর নিজের ব্যক্তিগত ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করা গান চলে যায় ঈগল মিউজিক ও সাউন্ডেটেক’র মতো সংগীতাঙ্গনের মিডিয়া প্লাটফর্মে। সেই গানগুলো দিয়ে তৈরি হয় মিউজিক ভিডিও।
বেশ কিছু টেলিভিশন নাটকেও স্থান পেয়েছে তার গান। এভাবেই সংগীতাঙ্গনে জায়গা করে নিয়েছেন সামস ভাই। ৩০০ এর বেশি গান গেয়েছেন, যার মধ্যে ২০টি গান অন্যের লেখা ও সুর করা। বাকি সব গান সামস নিজেই লিখেছেন ও সুর করেছেন।
পুরো নাম শাহরিয়ার আহমেদ সাকিব। বন্ধুবান্ধবরা মিলে ও অনেকটা শখের বসে নিজেই নামকে ছোট করে ‘সামস’ আর শেষে ভাই লাগিয়ে হয়ে যান ‘সামস ভাই’।
চাঁদপুর জেলার মতলব উপজেলায় বেড়ে ওঠা এই তরুণের স্কুল ও কলেজ জীবন কাটে সেখানেই। এসএসসি শেষ করেছেন ২০১৪ সালে ও এইচএসসি ২০১৬ এ।
গানের শুরুটা স্কুল জীবন থেকে। শাহরিয়ার আহমেদ সাকিব বলেন, প্রাইমারি স্কুল থেকেই বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা হতো। বেশ ভালো গাইতাম প্রায় সব প্রতিযোগিতায় প্রথম হতাম আর সেখান থেকেই গায়ক হওয়ার অনুপ্রেরণা। তারপর কলেজ জীবনের শুরুর দিক থেকে গানের রেকর্ডিং, ধীরে ধীরে বাসায় স্টুডিও সেটআপ করা, বাসাতেই গান গাইতাম, রেকর্ডিং করতাম। নিজের ইউটিউব ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করতাম। আর সেখান থেকেই এই পর্যন্ত আসা।
এক সাক্ষাতকারে এ গায়ক বলেন, গান গাইব যতদিন ভালো লাগে। একটা সময় পর গান ছেড়ে দিব। গান নিয়ে আমার কোনো স্থায়ী পরিকল্পনা নেই। তবে যতদিন গান করব শ্রোতাদের ভালো কিছু দেওয়ার চেষ্টা করব। সামনের দিনগুলোতে গানে একটু পরিবর্তন আসবে এবং শ্রোতারা ব্যতিক্রম কিছু পাবে আশা করছি।
সাকিব আরও বলেন, আমার সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা মনে হয় এই প্রজন্মে এসে শিল্পী হওয়া। কারণ মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি জুনিয়রদের মূল্যায়ন করতে চায় না। আমরা জুনিয়ররা যদি সিনিয়রদের কাছ থেকে দিক নির্দেশনা পেতাম হয়ত আরও ভালো করতে পারতাম। শ্রোতাদের আরও ভালো গান উপহার দিতে পারতাম। আর সফলতা বলতে আমি গান গাইতে পারি আর এটা লক্ষ-কোটি মানুষের কানে পৌঁছে যাওয়া, আর সেই মানুষগুলোর ভালোবাসা অর্জন করা।
অসংখ্য গান গেয়েছেন, আরও গাইতে চান আর গানকে নেশা হিসেবেই দেখছেন এই তরুণ সংগীতশিল্পী। গানের নেশার জীবন শৈশবে কাটলেও কৈশোরে ভিন্নতা দেখা দিয়েছে। পরিবারের দুই ভাইয়ের মধ্যে বড় সন্তান হওয়ায় কৈশোরে পেশা হয়ে গেছে সংগীত। একটা সময় গান ছেড়ে দিয়ে ব্যবসায় ঝুঁকবেন বলে জানান এই তরুণ। সংগীতাঙ্গনে আসার পর তৈরি হয় হেটার্স।
আর সেই হেটার্সদের উদ্দেশ্যে করে তিনি বলেন, কাউকে দূর থেকে দেখে বিচার করা ঠিক না। তবে এটা বলতে পারি সেই হেটার্সরাই যদি কাছে আসে তাদের সমালোচনার বিষয়টা থাকবে না। উল্টো ভালোবাসাও জন্মাবে। যারা আমার গানকে ভালোবাসেন, আমাকে ভালোবাসেন অথবা ভালোবাসেন না, তাদের প্রতিও আমার ভালোবাসা রইল।