মতলব উত্তরের গজরা ইউনিয়নে স্বামী উজ্জ্বলের পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলা স্ত্রী কল্পনা বেগমকে আটক করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুর দেড়টার দিকে পলাতক থাকার পর গ্রামে আসলে কল্পনাকে এলাকাবাসী ধরে পুলিশে দেয়। পরে পুলিশ তাকে থানায় হেফাজতে নেয়।
আটকের পর কল্পনা বেগম জানান, উজ্জ্বল মিথ্যা কথা বলে আমাকে বিয়ে করেছে। আমার আগে দুই স্ত্রী ছিল, পরে আমাকে বিয়ের পরও আরেকটি বিয়ে করে। আমাকে প্রথমে ভালোবাসার অভিনয় করে, পরে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। আমার কোনো খোঁজ নেয় না। আমি ও আমার দেড় বছরের মেয়ে রোজা আক্তারের কোনো খরচ দেয় না, উল্টো মারধর করত।
তিনি আরও বলেন, আমি ডিভোর্স চাইলে সে দেয়নি। গতকাল আবার টাকাপয়সা দিয়ে আমাকে নিয়ে যেতে আমাদের বাড়িতে আসে। রাতে রাগের মাথায় ব্লেড দিয়ে কাজটা করেছি। পরে তার পুরুষাঙ্গ পুকুরে ফেলে দিয়েছি।
ভুক্তভোগী স্বামী মো. উজ্জ্বল (৩৫), নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার চওড়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উজ্জ্বলের প্রথম স্ত্রী আফরোজার ঘরে দুই ছেলে সন্তান রয়েছে, দ্বিতীয় স্ত্রী রোজিনা, তৃতীয় কল্পনা বেগম এবং আরেকজন স্ত্রীকে নিয়ে উজ্জ্বল কুমিল্লা শহরে বসবাস করতেন। এছাড়া, কল্পনার নিজের অতীত জীবনও বিতর্কিত। তিনি এর আগেও দাউদকান্দির পদুয়া গ্রামের মো. জামালের সঙ্গে বিবাহিত ছিলেন এবং সেই জামাল হত্যার ঘটনায় কল্পনা এক বছর জেলও খেটেছেন বলে জানা গেছে। সেখানেও তার একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
রাতের ওই ঘটনার পর অজ্ঞাত এক ব্যক্তি মো. উজ্জ্বলের ফোন থেকে তার আরেক স্ত্রী ফারজানাকে কল করে বিষয়টি জানান। এরপর ফারজানা গিয়ে তাকে রক্তাক্ত ও অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে চাঁদপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।
মতলব উত্তর থানার ওসি মো. রবিউল হক বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক ও সংবেদনশীল। অভিযুক্ত কল্পনা বেগমকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি অপরাধ স্বীকার করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার পর পুরো উপজেলা জুড়ে তীব্র উত্তেজনা ও আলোচনা শুরু হয়েছে। একাধিক বিয়ের কারণে পারিবারিক অশান্তির জেরে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পুলিশ ইতোমধ্যে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে এবং জড়িতদের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।