চাকরিতে ১৪তম গ্রেড ও ‘টেকনিক্যাল পদমর্যাদা’ দেওয়াসহ ছয় দাবিতে ‘বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন’-এর কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সারা দেশের ন্যায় চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) সকালে ‘বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন’ মতলব উত্তর উপজেলা শাখার ব্যানারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন মতলব উত্তর উপজেলা হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি মোঃ মিজানুর রহমান এবং সঞ্চালনায় ছিলেন চাঁদপুর জেলা হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম-সম্পাদক ও মতলব উত্তর উপজেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুৃর আলম।
বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন মতলব উত্তর উপজেলা শাখার সভাপতি মোঃ কামাল হোসেন খুবই অসুস্থ থাকায় ভার্চুয়ালিভাবে ভিডিও কলে সভাপতি হিসেবে চাকরিতে ১৪তম গ্রেড ও ‘টেকনিক্যাল পদমর্যাদা’ দেওয়াসহ ছয় দাবির বিষয়ে বিস্তারিত দিগ তুলে ধরে বক্তব্য প্রদান করেন।
উক্ত কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুর জেলা হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মতলব উত্তরের সাবেক সভাপতি গাজী জসিম উদ্দিন, চাঁদপুর জেলা হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রচার সম্পাদক ও মতলব উত্তরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অজিত কুমার দাস, স্বাস্থ্য পরিদর্ক নুরুর নাহার, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক রোকেয়া বেগম, শহিদ উল্লাহ, বিমল চন্দ্র দাস, উম্মে সালমা, বুলবুলি আক্তার, ইউসুফ আলী, আহসান উল্লাহ, মোঃ জাকির হোসেন, রুমিয়া আক্তার, মতলব উত্তর উপজেলা হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ ফারুক আহম্মেদ, স্বাস্থ্যসহকারী কানিজ ফাতেমা,সারোয়ার আহম্মেদ, মোঃ মেহেদী হাসান, মুরাদ হোসেন, সাইদুজ্জামান, সঞ্জয় দাস, মোঃ ইব্রাহিম খলিল, রহিমা খানম, শাহনাজ আক্তার, মোসাদ্দেক আলী, দেলোয়ার হোসেন, হাবিবা সুলতানা প্রমূখ। এ সময় উপজেলার স্বাস্থ্য পরিদর্শকগণ, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও সকল স্বাস্থ্য সহকারী উপস্থিত ছিলেন।
সকাল ৮টার মধ্যেই উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের স্বাস্থ্যসহকারীরা হলুদ মনি পতাকা হাতে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে উপস্থিত হন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে এ কর্মসূচি হয়। স্বাস্থ্য সহকারীরা দীর্ঘদিন বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা।
তাদের অন্য দাবির মধ্যে রয়েছে-পদোন্নতির ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে উচ্চতর গ্রেড নিশ্চিত করা; সব স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য পরিদর্শককে প্রশিক্ষণ ছাড়াই স্নাতক স্কেলে অন্তর্ভুক্ত করা; বেতন স্কেল পুননির্ধারণের সময় প্রাপ্ত টাইম স্কেল বা উচ্চতর স্কেল সংযুক্ত করা এবং ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমা সম্পন্নকারীদের স্নাতক সমমানের স্বীকৃতি দেওয়া, সকল পর্যায়ে ন্যায্য পদোন্নতি ও স্বীকৃতি নিশ্চিত ।
বক্তারা বলেন, সারা দেশের বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৬ হাজারের বেশি স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, স্বাস্থ্য পরিদর্শক কাজ করছেন। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর রোগ প্রতিরোধে কাজ করেন তারা। এছাড়াও রোগ থেকে মুক্তির উপায়, নতুন রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়ানো এবং পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
তারা সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) বাস্তবায়ন,] ১৫-৪৯ বছর বয়সি নারীদের টিটি/টিডি টিকা দেওয়া, গর্ভবতী মা ও শিশুদের সেবা দেওয়া, প্রসব-পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সেবা দিয়ে থাকেন।
বক্তারা আরও বলেন, স্বাস্থ্য সহকারীরা অপ্রতুল সুযোগ-সুবিধা ও সীমিত জনবল নিয়েও দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। চার দশকের বেশি সময় তারা প্রথম সারির যোদ্ধা হিসাবে জনগণের স্বাস্থ্যসেবায় রয়েছেন।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, আজ পর্যন্ত তাদের পদে কোনো পরিবর্তন হয়নি। বেতন কাঠামোয় রয়েছে চরম বৈষম্য। তাই স্বাস্থ্য সহকারীদের দাবি মেনে নিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানান তারা।