বেঁচে থাকার জন্যই জীবন যুদ্ধ,এ জীবন যুদ্ধ করতে হয় জীবিকা নির্বাহের জন্য। দু’মুট ভাত পেটে দিতে নিজেকে বিলিয়ে দিতে হয় শ্রমজীবি কাজে। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দু’পায়ে দারিয়ে ভাজাপোড়া দিন কাটাতে হচ্ছে বাদাম বিক্রেতা রনি শেখকে। এই বাদাম বেপারীল বেশিরভাগ সময় কাটে চাঁদপুরের মতলব উত্তরে ছেংগারচর বাজারের অলি গলিতে ভ্যানে করে বাদাম বিক্রি করে। উপজেলার ছেংগারচর বাজারে বাদাম ও সিমের বিচি বিক্রি করে স্বাবলম্বী হয়েছেন রনি শেখ। সে এখন অন্য দশ জনের মতো ভালো ভাবেই চলছেন।
এই বাদাম বিক্রেতা রনি শেখ মতলব উত্তরে ছেংগারচর বাজারের অলি গলিতে ভ্যানে করে বাদাম বিক্রি করে সাবলম্বী হয়েছেন। স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে এখন বেশ ভালোই সংসার চালাচ্ছেন। ৫ বছর আগে শুরু করা এই বাদাম বিক্রির ব্যবসার পূর্বে দু মুটো ভাত ও কাপড় জোগাতেই কষ্ট হতো রনির। এখন সে অন্য দশনের চেয়ে সন্ত্রী,সন্তান নিয়ে খুব ভালো ভাবেই সুখে, শান্তিতে বসবাস করছেন । তার সংসারে কোনো অভাব অনটন নেই বল্লেই চলে।
সম্প্রতি টাটকা গরম বাদাম, ছোলা ও শিমের বিচি বিক্রি করতে করতে নিজের সাবলম্বী হওয়ার গল্প জানান রনি শেখ নিজেই। তিনি বলেন, এই মতলব উত্তরে বাদাম বিক্রেতা হিসাবে আমাকে প্রায় সবাই চেনেন। ভ্যানে চুলা বসিয়ে বাদাম ছোলা, শিমের বিচি,চাল ভাজা,বুট ভেজে তা বিক্রি করছি। সাধারণ মানুষদের কাছে প্রতিদিন এগুলো বিক্রিতে গড়ে লাভ হয় ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা।
জানা যায়, বাদাম বিক্রেতা ৩৭ বয়সী রনি শেখ ব্রাাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার রাজাপুর গ্রামের সন্তান। গেল ৫ বছর ধরে মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর বাজারের পাশে আদুরভিটি গ্রামে ভাড়া বাসায় স্ত্রী ও ২ সন্তান নিয়ে তিনি বসবাস করেন। এখান থেকেই বিকেল ও রাত পর্যন্ত পৌরসভার ছেংগারচর বাজারের বটতলা মোড়, কলেজ রোড, থানা রোড, মধ্য বাজারে ঘুরে ঘুরে বাদাম ও ছোলা বিক্রি করেন। রনি শেখের এই গল্পটি প্রমাণ করে যে, ছোট ব্যবসা করেও স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব। তার এই উদ্যোগ অনেকের জন্য অনুপ্রেরণা।
প্রতিদিন তার ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা লাভ হয়। তিনি প্রতিদিন ২০ টাকার বাদাম ও ১০ টাকার ছোলা বিক্রি করেন, যা তার পরিবারের সদস্যদের জন্য যথেষ্ট।
বাদাম বিক্রেতা রনি শেখ বলেন,তার বাদাম যারা খাবে তারা বার বার তাকে খোঁজবেন তার ভাজাপোড়া অত্যান্ত সুস্বাধু ও মজাদার হয়। এজন্য বেচা-বিক্রিও ভালো হয়। তার ভাজাপোড়া গ্রামীণ পুরাতন পদ্ধতিতে তা করা হচ্ছে। তার ভাজাপোড়া খেকে উপজেলার দূর-দূরান্ত থেকে অনেক লোক ছুটে আসে মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর বাজারের চৌরাস্তা মোড়ে।
ছেংগারচর পৌর এলাকার আদুরভিটি গ্রামের আরমান কাজী বলেন, রনি ভাইয়ের কাছে গরম ভাজা বাদাম পাওয়া যায়। তাই অন্য কারও কাছ থেকে বাদাম নেই না। ঠান্ডা বাদামের চেয়ে গরম ভাজা বাদাম খেতেই বেশি মজা লাগে।
ছেংগারচর বাজারের ব্যবসায়ী মোঃ নাসির উদ্দিন খান বলেন, সন্ধ্যায় ছেংগারচর বাজারে রনি নামের বাদাম বিক্রেতাকে পাওয়া যায়। প্রতিদিন তার কাছ থেকে ২০ টাকার বাদাম ও ১০ টাকার ছোলা কিনে নিয়ে বউ বাচ্চাসহ খাই। শীতের মৌসুমে গরম এবং টাটকা ভাজা বাদাম আর ছোলা খেতে অনেক ভালো লাগে।বাজারের ব্যবসায়ী নাঈম বলেন, প্রায় ৭ বছর যাবৎ এই বাদাম বিক্রেতা রনিকে চিনি। তার স্বভাব চরিত্র অনেক ভালো। নিয়মিত তার কাছ থেকে ১০-২০ টাকার কিছু না কিছু বাদাম ছোলা কিনে খাই। তার যেকোন প্রয়োজনে পাশে থাকবো।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, তার আচার-আচরণ অত্যান্ত ভালো এবং সে একজন সফল বাদাম ও সিমের ব্যবসায়ীও বটে। রনি শেখ অত্যান্ত সহজ সরল ছেলে। দর্ঘিদিন ধরে উপজেলার ছেংগারচর বাজার এলাকায় থাকে। দার ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে সবাই তার কাছ থেকে গরম গরম ভঅজা টাটকা বাদাম ও সিমের বিচি ক্রয় করে।