আজ বৃহস্পতিবার

৩১শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

১৬ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৬ই সফর, ১৪৪৭ হিজরি

এখন সময়:

দুপুর ১২:৩৩

ভিজিডি’র ১৪ বস্তা চাউল গেল মহিলা লীগ নেত্রীর বাসায়

227 Views

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ১০নং ফতেপুর পূর্ব ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও সচিবের যোগসাজসে ভিজিডি’র ১৪ বস্তা (৭০০ কেজি) চাউল আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ২৬ জুলাই ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চাউলগুলো সরানো হয়।

পরে খবর নিয়ে জানা গেছে, ওই ইউনিয়নের রসুলপুর ও ভাটি রসুল গ্রামের দুই মহিলা লীগ নেত্রীকে ভিজিএফ কার্ড ছাড়াই ৭ বস্তা করে ১৪ বস্তা চাউল দেন ইউপি চেয়ারম্যান আজমল হোসেন চৌধুরী। ট্যাগ অফিসারের অনুপস্থিতিতে চাউল গুলো বের করা হয়েছে বলে জানা গেছে। স্থানীয়রা বলছেন ইউপি চেয়ারম্যান আজমল হোসেন চৌধুরী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি তাই অনিয়ম দুর্নীতি করে সবসময় তার দলীয় নেতাকর্মীদের সুবিধা দিয়ে থাকেন।

গত শনিবার রাতে অটোরিক্সা যোগে চাউল নেওয়ার সময় সাহেব বাজার এলাকায় জনতার হাতে ধরা পড়ে। এরপর থেকে বিষয়টি নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পরে অনুসন্ধানে জানা গেছে, ফতেপুর পূর্ব ইউনিয়ন মহিলা লীগ নেত্রী ভাটি রসুলপুর গ্রামের ববিতা আক্তার ও রসুলপুর গ্রামের ফাতেমা মনি ৭ বস্তা করে ১৪ বস্তা চাউল বাড়ি নিয়ে যান। পরবর্তীতে ওই চাউল গুলো তারা বস্তা ভেঙ্গে ড্রামে মজুদ করে ফেলেন। নিজেরা নিয়মবহির্ভূত চাউল নেওয়ার কথা স্বীকার করেন ওই দুই মহিলা লীগ নেত্রী।

ফাতেমা মনি বলেন, আমার কোন কার্ড নেই, আমার প্রতিবেশী দুইজন অসহায় নারীর নামে ভিজিডি কার্ড আছে, সেই কার্ডের ২ বস্তা চাউল এনেছি। আর আমি ব্যক্তিগতভাবে চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ২ বস্তা খুঁজে আনছি। এই ৪ বস্তা চাউল মানুষের মাঝে বিলি করে দিয়েছি।

মহিলা নেত্রী ববিতা আক্তার বলেন, আমার নামে ভিজিডি কার্ডের ২ বস্তা, আমার গ্রামের আরো ২টি কার্ডের ২ বস্তা আর চেয়ারম্যানের কাছ থেকে চেয়ে এনেছি ১ বস্তা সহ আমি মোট ৫ বস্তা চাউল এনেছি।

ইউপি সচিব আঃ ওহাবের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভিজিডি কার্ডধারীদের ৫ মাসের চাউল একসঙ্গে এসেছে গত মে মাসে। এরমধ্যে যারা বিতরণের সময় চাউল নিতে পারেনি, তারা পরবর্তীতে নিয়েছেন। গতকাল শনিবারও ৩ জন কার্ড নিয়ে এসেছে, তাদেরকে ৬ মাসের ১১ বস্তা চাউল বিতরণ করা হয়। কিন্তু মাস্টাররোলের তথ্য অনুযায়ী ৩ জনকে জানুয়ারী-মে পাঁচ মাসের ৯ বস্তা চাউল দিয়েছেন বলে মাস্টাররোলে উল্লেখ আছে।

এ ব্যাপারে ফতেপুর পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আজমল হোসেন চৌধুরী সাংবাদিকদের আনুষ্ঠানিকভাবে কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তবে কথা বলার এক পর্যায়ে বলেন, আমি আমার দলীয় নেতাকর্মীদেরকে দিয়েছি তাতে কি সমস্যা হয়েছে? নেতাকর্মীদের চাউল দিতে গেলে তো কার্ডধারীদের চাউল কম হয়ে যাবে সেটা কভার করবেন কিভাবে?

এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভিজিডি কার্ডধারীদের সবাইকে ২/৩ কেজি করে কম দিয়ে কভার করি। এনায়েতনগর গ্রামের মামুনের স্ত্রী জুলেখা আক্তার ও একই গ্রামের শাহআলম সরকারের স্ত্রী রূপালী আক্তারের নাম ভিজিডি মাস্টাররোলে থাকলেও শনিবার তাদের গ্রামেরই কোন চাউল যায়নি। চাউল কি করে অন্য গ্রামের মহিলা নেত্রীদের হাতে কাছে গেল? এ প্রশ্নের কোন জবাব তিনি দিতে পারেন নি।

ফতেপুর পূর্ব ইউনিয়নের ট্যাগ অফিসার ও উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ শাহাদাৎ হোসেন বলেন, শনিবার চাউল বিতরণের ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, ঘটনাটি আমি জানতে পেরে সাথে সাথে ওসি মতলব উত্তর থানাকে বলেছি চাউল উদ্ধার করতে হবে। আর যদি এই ঘটনাটি অনিয়ম হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই মামলার মাধ্যমে আইগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Share This Article
Leave a Comment

শেয়ার করুন:

শীর্ষ সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

error: Content is protected !!