ভরা মৌসুমেও চাঁদপুরের মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলার বাজারে বড় ও মাঝারি আকারের ইলিশ সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। দাম চড়া থাকায় সেগুলোর বেচাকেনা কম। তবে বাজারে ছোট আকারের ইলিশ বা স্থানীয়ভাবে পরিচিত ‘টেম্পু ইলিশ’ই ভরসা হয়ে উঠেছে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য। তুলনামূলক কম দামে মিলছে এই ইলিশ। ক্রেতাদের ভিড়ও বেশি দেখা যাচ্ছে এসবের পাশে।
গত দুদিন সকালে মতলব দক্ষিণ উপজেলা সদর, মুন্সিরহাট এবং মতলব উত্তর উপজেলার আমিরবাদ ও সুজাতপুরসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। এসব বাজারে এক কেজি বা তার বেশি ওজনের ইলিশের সরবরাহ কম এবং দাম অনেক বেশি। তবে বাজারে ৩০০ থেকে ৪৫০ গ্রাম ওজনের ছোট ইলিশ প্রচুর আসছে। দাম কিছুটা কম হওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষ সেগুলোই কিনছেন।
মতলব দক্ষিণ উপজেলা সদর বাজারের মাছ বিক্রেতা মো. রয়েল ও পানু দাস বলেন, ৮০০ গ্রাম থেকে এক কেজি ওজনের ইলিশ কেজিপ্রতি ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে সেগুলোর বেচাকেনা কম। অন্যদিকে ৩০০ থেকে ৪৫০ গ্রাম ওজনের ছোট ইলিশ প্রচুর আসছে। প্রতিদিন আড়াই থেকে তিন মণ ছোট ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারা দু-তিন কেজি করেও কিনছেন। ছোট হলেও পদ্মার এই ইলিশ সুস্বাদু।
গতকাল সকালে মতলব দক্ষিণ উপজেলা সদরের বাজারে দেখা গেল নির্মাণশ্রমিক শহীদ মিয়া মাছ কিনছেন। হাতে এক কেজি ইলিশ।
তিনি জানান, ‘আমাগো আয়-রুজি কম। বেশি টেয়া দিয়া বড় ইলিশ কিননের সাধ্য নাই। হেগুলো দেহা পর্যন্তই। এলিগা ৭৫০ টেয়ায় এক কেজি টেম্পু ইলিশ কিনলাম। এক কেজিতে তিনটি ধরছে। বড় ইলিশ বড় লোকেগো, আমাগো কপালে টেম্পু ইলিশই। তবে এবার ভরা মৌসুমেও ইলিশের দাম কমতাছে না। আর কমবেও মনে অইতাছে না।’
মৎস্য কর্মকর্তারা বলছেন, জুলাই থেকে অক্টোবর ইলিশের ভরা মৌসুম। তবে এবার এখনো প্রত্যাশিত হারে ইলিশ ধরা পড়েনি। তাই দামও কমেনি।
মতলব উত্তর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস ও মতলব দক্ষিণের সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, মেঘনায় এবার প্রত্যাশিত পরিমাণে ইলিশ ধরা পড়ছে না। তবে সামনে ইলিশ বেশি ধরা পড়তে পারে। তখন দাম কিছুটা কমবে। ছোট ইলিশ তুলনামূলক কম দামে পাওয়া যাওয়াটা ইতিবাচক। এতে গরিব মানুষের পাতে ইলিশ জুটছে।