চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নে চাল বিতরণে চরম অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগ নেতা সাখওয়াত হোসেন সরকার মুকুল এবং তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে।
এই ইউনিয়নের ৪৬০ জন নিবন্ধিত জেলের জন্য বরাদ্দকৃত ৮০ কেজি করে চালের সঠিক বণ্টন না করে, তাদের অনেককে ৬৫ থেকে ৭০ কেজির বেশি না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় একাধিক জেলে অভিযোগ করেন, মুকুল সরকারের আপন ভাই স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা রিপন সরকার ও প্যানেল চেয়ারম্যান এর নেতৃত্বে পরিচালিত বিতরণ কার্যক্রমে প্রায় সবাইকে বরাদ্দের তুলনায় কম চাল দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগীরা বলছেন ”আমরা ৮০ কেজির চাল পাইনি, কেউ ৬৫ কেজি, কেউ ৭০ কেজি চাল পেয়েছি। বাকি চাল কোথায় গেলো?
জেলে সুধাংশু, সুজন সুতার, কমল সরকার জানান, আমরা ইউনিয়ন পরিষদের চাউল আনতে গেলে চেয়ারম্যানের ভাই রিপন সরকার আমাদেরকে ৫০ কেজির ১ বস্তা ও সাথে ১০ থেকে ১২ কেজি চাউল দিছে। আমরা নিতে অসম্মতি জানাইলে তিনি বলেছেন কোন কথা বললে চাউল দিব না। তখন আমরা চাউল নিতে বাধ্য হয়েছি।
ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা রাজীব চন্দ্র ভক্ত জানান, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা ৮০ কেজি করে চাল বিতরণের কথা বলেছি। ৭০ কেজি করে কেন দেওয়া হয়েছে, তার দায় আমি নিতে পারি না।
অন্যদিকে বিতরণ কার্যক্রমের নেতৃত্বে থাকা প্যানেল চেয়ারম্যান মো. খলিল বলেন, আমাকে চেয়ারম্যান যেভাবে বলেছেন, আমি সেভাবেই দিয়েছি। অথচ ইউনিয়ন পরিষদের অধিকাংশ ইউপি সদস্যরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের না জানিয়ে এককভাবে চেয়ারম্যান ও প্যানেল চেয়ারম্যান চাল বিতরণ করেছেন। আমাদের এতে কোনো ভূমিকাই ছিল না। ঘটনার সময় ট্যাগ অফিসার ও উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা তারিক মাহমুদ হোসেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না।
ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি দাবি করেন, আমি যতক্ষণ ছিলাম ততক্ষণ সঠিকভাবেই চাল দেওয়া হয়েছিল। আমি জরুরী কাজে উপজেলা পরিষদে চলে আসলে তারা কি করেছে আমি জানিনা।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান সাখওয়াত হোসেন সরকার মুকুলের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, জাটকা রক্ষা কর্মসূচির সহায়তা নিয়ে কোনো অনিয়ম হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখছি। প্রয়োজন হলে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।