পরিবার থেকেই গড়ে উঠে একটি সমাজ। সময়ের পরিক্রমায় পারিবারিক বন্ধন যেন ঠুনকো হয়ে উঠেছে। আর বংশের বন্ধন তো গেছে ছিন্নভিন্ন হয়ে। নানা কোন্দল আর সহিংসতার ঘটনাও হালের পরিবারগুলোতে কম নেই। তারপরও সমাজে এখনো কিছু কিছু কর্মকাণ্ড সত্যিই আশার আলো জোগায়। শেখায় অনেক কিছু।
আর এমন এক আলোকজ্জল অনুষ্ঠান ছিল চাঁদপুরের মতলব উত্তরের ঘনিয়ারপাড়ের মোল্লা বাড়ির পারিবারিক বিরল এক মিলনমেলায়। এসময় আনন্দ-আড্ডা, সুখ-দুঃখের ভাগাভাগিতে মুখরিত হয়ে উঠে সকলে।
বংশ কিংবা গোষ্ঠীর বন্ধন ধরে রাখতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গেলো বছরে গঠন করা মোল্লা ফাউন্ডেশন। শুক্রবার সংগঠনটির ২য় বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে বর্ণাঢ্য এক র্যালি বের করে পরিবারটি। পূর্বপুরুষের অস্তিত্ব ধরে রাখতে শেকড়ের সন্ধানে এসময় শতাধিক নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর-বৃদ্ধ সব বয়সীদের ছিল প্রাণখোলা উপস্থিতি।
র্যালিশেষে কেক কেটে পারিবারিক বন্ধনের ২য় বর্ষপূর্তি উৎযাপনের মধ্য দিয়ে আলোচনা সভায় মিলিত হয় তারা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মোল্লা পরিবারের কৃতিমান মানুষ ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা আলী মনসুর শাহিন।
মোল্লা ফাউন্টেশনের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ফারুক হোসেনের সঞ্চালনায় এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ রবিউল হক।
বক্তব্যে পারিবারিক এই বন্ধনকে বিরল আখ্যা দিয়ে অভিভূত হয়ে নিজেদের ভুঁইয়া পরিবারকে এভাবে সংগঠিত করার পরিকল্পনা জানান ওসি। তিনি জানান, সমাজের অসহিষ্ণু মানসিকতার মানুষের পরিবার ও গ্রামভিত্তিক সমাজের কাছে একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে সংগঠনটি।
এসময় আরও বক্তব্য রাখেন, উপজেলা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারন সম্পাদক গোলাম নবী খোকন, ফাউন্ডেশনের প্রধান উপদেষ্টা হাজী রশিদ মোল্লা, সিনিয়র সহ-সভাপতি রফিক মোল্লা, সাংগঠনিক সম্পাদক মনির মোল্লা, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নুরনবী মোল্লা, রহিম উদ্দিন মোল্লা, জাহাঙ্গীর মোল্লা, ইমন মোল্লা সহ অনেকেই।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেনো ফাউন্ডেশন সহ-সভাপতি মো. আবুল কালাম মোল্লা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. কবির হোসেন মোল্লা, অর্থ সম্পাদক মো. ইব্রাহিম মোল্লা, দপ্তর সম্পাদক মো. মাহফুজ আলম মোল্লা, আন্তর্জাতিক সম্পাদক সোহাগ মোল্লা, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রোমান মোল্লা, কার্রকরী সদস্য মোঃ শাহিন মোল্লা, আমির হোসেন মোল্লা, মমিন মোল্লা, ইমরান মোল্লাসহ পরিবারবর্গ।
সভাশেষে বিশেষ দোয়া-মোনাজাতের মধ্য দিয়ে সকলের জন্য শান্তি কামনা করা হয়। এরপর পরিবারের ছোট সদস্যদের মাঝে তরুণ সংগঠক ও ছাত্রনেতা ইমন মোল্লার অর্থায়নে শিক্ষাসামগ্রী তুলে দেন অতিথিরা।
এর আগে বক্তারা, সামাজিক নানান সমস্যার কথা তুলে ধরে এসব থেকে পরিবারের সকলকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন। তারা বলেন, মিলনমেলার এ উৎসব শুধু প্রেরণাই যোগাবে না, স্বজনের আন্তরিকতা সমৃদ্ধ করবে। অস্থির সমাজ ব্যবস্থার জন্য এক অনুকরণীয় দিক হিসেবে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কাজ করবে সংগঠনটি। শুধু তাই নয়, সবার দৃঢ় পারিবারিক বন্ধন ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আলোর পথ দেখাবে, এমনটাই প্রত্যাশা করেন সকলে।