আজ মঙ্গলবার

১৪ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

২৯শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

২২শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

এখন সময়:

বিকাল ৩:০৬

ঋণ রেখেই প্রবাসে মারা গেলেন মতলবের তরুণ হাবিব

638 Views

২০২৩ সালে দালালের মাধ্যমে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা ঋণ করে জীবিকার সন্ধানে সৌদি আরবে যান মো. হাবিব খান (২১)। সৌদির মক্কায় একটি আবাসিক হোটেলে কিছুদিন কাজ করার পর আর কাজ পাননি। ছোটখাটো কাজ জুটলেও পারিশ্রমিক পেতেন না তেমন। ১২ দিন আগে হঠাৎ বুকে ব্যথা ওঠে তাঁর। এক সহকর্মী তাঁকে মক্কার একটি হাসপাতালে ভর্তি করেন। রোববার রাত ১১টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে মারা যান তিনি। স্বজনেরা এখন তাঁর মরদেহের অপেক্ষায়।

হাবিব খানের বাড়ি চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার নবকলস এলাকায়। ওই এলাকার মিজানুর রহমান খান ও হোসনে আরা বেগম দম্পতির চার সন্তানের মধ্যে একমাত্র ছেলে তিনি।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, মো. হাবিব খান উপজেলার মতলব সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ২০২৩ সালের নভেম্বরে জীবিকার সন্ধানে স্বপ্ন নিয়ে সৌদি আরবে যান। সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা ঋণ করে মো. রাশেদ নামে নারায়ণগঞ্জের এক দালালের মাধ্যমে ‘ফ্রি ভিসায়’ দেশটিতে যান। সৌদির মক্কা নগরে কিছুদিন একটি আবাসিক হোটেলে কর্মচারী হিসেবে কাজ করার পর কাজ ছেড়ে দেন। এরপর সেখানকার এক দালালের অধীনে থেকে মাঝেমধ্যে ছোটখাটো কাজ পেলেও তেমন পারিশ্রমিক পেতেন না। অধিকাংশ সময় কাটাতেন বসে বসে। নিজের হতাশা ও কষ্টের কথা জানাতেন বাবা-মা ও বোনসহ স্বজনদের।

হাবিব খানের বাবা মিজানুর রহমান খান সোমবার গগণমাধ্যমকে জানান, ছেলে অনেক স্বপ্ন নিয়ে সৌদি আরবে গিয়েছিল। যাওয়ার সময় ঋণ করতে হয় সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা। বিদেশ গিয়ে তেমন কাজ না পাওয়ায় ওই টাকা এখনো শোধ হয়নি। এ নিয়ে খুব হতাশ ও কষ্টে ছিল ছেলে। ১২ দিন আগে ফোন পেয়ে জানতে পারেন ছেলের হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। তাঁকে মক্কার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর রোববার গভীর রাতে সেখানকার তাঁর এক সহকর্মীর ফোনের মাধ্যমে জানতে পারেন, এদিন স্থানীয় সময় রাত ১১টায় তাঁর ছেলে ওই হাসপাতালে মারা গেছেন।

মিজানুর রহমান খান বলেন, ‘ছেলে বিদেশ গেল জীবিকার লাইগা। অনেক স্বপ্ন ছিল তাঁর। সেখানে কাজ না পেয়ে দুশ্চিন্তায় আমার ছেলে অসুস্থ হয়ে গেল। শেষমেশ হার্ট অ্যাটাকে মারা গেল। ঋণের টাকা শোধ হয়নি এখন পর্যন্ত। ঋণ থেকে গেল, ছেলেটা দুনিয়া ছেড়ে চলে গেল। এ কষ্ট ও শোকের কথা কাকে বুঝাবো, আমার সব শেষ। এহন লাশের অপেক্ষায় আছি। শেষবারের মতো তাঁর মুখটা একটু দেখতে চাই।’

সৌদি আরবে ওই তরুণের মৃত্যুর খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সালেহ আহাম্মদ বলেন, বিদেশ থেকে তাঁর মরদেহ আনার বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

Share This Article
Leave a Comment

শেয়ার করুন:

শীর্ষ সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ